নিউজ ডেস্ক :: বাংলাদেশ—যে দেশ ঘামে, শ্রমে, মেধায় গড়ে উঠেছিল উন্নয়নের প্রতীক হিসেবে—আজ ধীরে ধীরে নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে এক অদ্ভুত নৈরাজ্যের ছায়ায়। এক সময় শেখ হাসিনার নেতৃত্বে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, যোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতে অভূতপূর্ব সাফল্যের সাক্ষী ছিল এই দেশ। গ্রাম থেকে শহরে পৌঁছে গিয়েছিল উন্নয়নের আলো, মানুষ পেয়েছিল মর্যাদা, আত্মবিশ্বাস ও নিরাপত্তার অনুভব। কিন্তু আজ সেই দেশ যেন এক দুঃস্বপ্নের মধ্যে ঘুমিয়ে আছে, যার শাসক একজন অবৈধ ক্ষমতাধারী—ড. ইউনুস।
অবৈধ ইউনুস সরকারের শাসনে রাষ্ট্র আজ পরিণত হয়েছে অস্থিরতা, দুর্নীতি ও দমননীতির প্রতিচ্ছবিতে। মানুষের মৌলিক অধিকার পদদলিত, স্বাধীনতা বন্দি, আর গণতন্ত্র কেবল মুখের বুলি। প্রতিদিন খবরের কাগজে উঠে আসছে লুটপাট, হরণ, নিপীড়ন আর অন্যায়ের কাহিনি। একদিকে দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি, অন্যদিকে কর্মসংস্থানের অভাব—দু’য়ে মিলে সাধারণ মানুষের জীবন হয়ে উঠেছে অসহনীয়। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে অনিয়মের বিস্তার এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, সেবা পাওয়া এখন যেন বিলাসিতা।
শেখ হাসিনার সময়ে গড়ে ওঠা নারীর ক্ষমতায়ন, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি, গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন, খাদ্য নিরাপত্তা—সবকিছুই এখন ভেঙে পড়েছে অব্যবস্থাপনা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অবহেলায়। সেই উন্নয়নের সুফল এখন কেবল অতীতের স্মৃতি। প্রশাসনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছড়িয়ে পড়েছে দুর্নীতি ও ভয়। যোগ্যতা নয়, এখন নিয়মের স্থলে চলছে স্বেচ্ছাচারিতা ও রাজনৈতিক প্রতিশোধের খেলা।
অবৈধ সরকার আজ মানুষের কণ্ঠরোধে ব্যস্ত। সাংবাদিকদের গ্রেফতার, শিক্ষক ও ছাত্রদের হয়রানি, ভিন্নমতের নাগরিকদের গুম–নিপীড়ন—এসবই যেন দৈনন্দিন বাস্তবতা। অথচ এই দেশ গড়ে উঠেছিল স্বাধীনতার চেতনা ও মানবিক মর্যাদার ভিত্তিতে। আজ সেই মূল্যবোধের মেরুদণ্ড ভেঙে ফেলা হয়েছে।
অর্থনীতির চাকা স্থবির। বিনিয়োগকারীরা অনিশ্চয়তায়, কৃষক ফসলের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না, শ্রমিকের মজুরি কমে গেছে। দেশজুড়ে মুদ্রাস্ফীতি ও বেকারত্বের ছোবলে মানুষ দিশেহারা। এই চিত্র কেবল অর্থনৈতিক নয়, এটি একটি রাষ্ট্রের নৈতিক পতনের প্রতীক।
তবু ইতিহাস আমাদের শেখায়—অন্ধকার কখনো স্থায়ী নয়। অন্যায় যতই গভীর হোক, একদিন না একদিন মানুষের চেতনা জেগে ওঠে। আজ সেই জাগরণের মুহূর্ত উপস্থিত। জনগণের মূক নীরবতা যদি চলতে থাকে, তবে এই দেশ কেবল উন্নয়ন নয়, স্বাধীনতার মূল চেতনাও হারাবে। তাই প্রয়োজন একটি গণজাগরণ—যা আসবে মানুষের মধ্য থেকে, শ্রমজীবী ও প্রান্তিক জনগণের হৃদয় থেকে।
আগামী ১৩ নভেম্বরের লকডাউন শুধু একটি রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়; এটি ন্যায়বিচার, মর্যাদা ও গণঅধিকারের প্রতিফলন। এই কর্মসূচির মর্মে রয়েছে একটাই বার্তা—দেশের মানুষ আর অন্যায় মেনে নেবে না। দেশের ভবিষ্যৎ যারা তৈরি করছে—তরুণ প্রজন্ম, শিক্ষক, কৃষক, শ্রমিক—তারা যদি একত্র হয়, তবে অবৈধ শাসনের সব শিকল ভেঙে যাবে।
ভয় নয়, দরকার চেতনার আগুন। প্রতিটি নাগরিককে বুঝতে হবে, এই দেশ তার নিজের, তার রক্তের বিনিময়ে অর্জিত। যদি আজ আমরা চুপ থাকি, আগামী প্রজন্ম প্রশ্ন করবে—কেন অন্যায়ের সামনে মাথা নোয়ানো হলো? কেন সত্যের পক্ষে দাঁড়ানো হলো না?
তাই এখনই সময়, ঘুম থেকে জেগে ওঠার। ভয়কে পেছনে ফেলে, অন্যায়কে চ্যালেঞ্জ করে, মানুষকে মানুষ হিসেবে মর্যাদা দেওয়ার সময় এসেছে। শেখ হাসিনার উন্নয়নমুখী বাংলাদেশের স্বপ্ন আবারও জাগ্রত হতে পারে—যদি আমরা একতাবদ্ধ হই, যদি আমরা সচেতন হই, যদি আমরা বলি: “না”—অবিচার, দুর্নীতি ও দমননীতির বিরুদ্ধে।
আজকের এই আহ্বান শুধু প্রতিবাদের নয়—এটি পুনর্জাগরণের ডাক। সেই ডাক শুনে জেগে উঠুক প্রতিটি হৃদয়, প্রতিটি পরিবার, প্রতিটি তরুণ। কারণ দেশের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে আমাদের সিদ্ধান্তের উপর আমরা চুপ থাকবো, না কি জেগে উঠবো ন্যায় ও স্বাধীনতার পথে।
বাংলাদেশ আর নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছে না, বাংলাদেশ জাগছে। এবং এই জাগরণই অবৈধ শাসনের পতন ঘটাবে আবার ফিরিয়ে আনবে সেই দেশ, যেখানে উন্নয়ন মানে মানুষের হাসি, মর্যাদা মানে ন্যায়বিচার, আর স্বাধীনতা মানে আলোর দিগন্ত।