নিউজ ডেস্ক :: অভিযোগ উঠেছে, এলজিইডির শীর্ষ পদ পেতে কোটি টাকার লেনদেনের তোড়জোড় প্রশাসনিক মহলে তীব্র সমালোচনা
বাংলাদেশের প্রশাসনিক কাঠামো আজ এক জটিল নৈতিক সংকটের মুখোমুখি। দেশের বৃহত্তম উন্নয়ন সংস্থা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) যেখানে প্রতিদিন হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়, সেখানে এখন উচ্চপদে নিয়োগকে ঘিরে ঘুষ ও প্রভাবের অভিযোগ নতুন করে আলোচনায় এসেছে।
সাম্প্রতিক সময়ে প্রশাসনিক মহলে গুঞ্জন ছড়িয়েছে, এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী পদটি পেতে মোটা অঙ্কের আর্থিক লেনদেনের চেষ্টা চলছে। বিভিন্ন সূত্রের দাবি, এই পদের জন্য প্রার্থীরা কোটি কোটি টাকার “কমিশন” দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন যার মোট পরিমাণ ৫০ কোটি টাকাও ছাড়াতে পারে বলে অনেকে বলছেন।
বর্তমান প্রধান প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেনের চাকরির মেয়াদ প্রায় শেষের পথে। এ অবস্থায়, তাঁকেও চুক্তিভিত্তিকভাবে পুনরায় নিয়োগের জন্য তদবির করছেন বলে প্রশাসনিক পর্যায়ে আলোচনা রয়েছে। একইসঙ্গে আরও দুজন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীও পদটি পেতে অর্থনৈতিক প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করছেন এমন খবরও বিভিন্ন সূত্রে শোনা যাচ্ছে।
অভিজ্ঞ কর্মকর্তারা বলছেন, যদি এসব আর্থিক প্রভাব বা লেনদেনের অভিযোগ সত্য হয়, তবে এটি শুধু প্রশাসনিক অনিয়ম নয় বরং রাষ্ট্রের নৈতিক শৃঙ্খলা ও উন্নয়ন ব্যবস্থার প্রতি সরাসরি আঘাত। একটি গুরুত্বপূর্ণ কারিগরি সংস্থার শীর্ষ পদ মানে প্রকল্প অনুমোদন, তহবিল বরাদ্দ ও গুণগত মান নিয়ন্ত্রণে নির্ধারক ভূমিকা। সেখানে যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার পরিবর্তে টাকার প্রভাব যদি প্রাধান্য পায়, তবে এর প্রভাব পড়বে দেশের উন্নয়ন অবকাঠামোর ওপরও।
প্রশাসনবিষয়ক বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এ ধরনের প্রভাব বা লেনদেন সরকারি কর্মচারী আচরণবিধি, সরকারি চাকরি আইন ও দুর্নীতি দমন কমিশন আইন সব কিছুর পরিপন্থী। রাষ্ট্রের নীতি, স্বচ্ছতা ও জনস্বার্থ রক্ষার স্বার্থে এ বিষয়ে দ্রুত স্বাধীন তদন্ত ও প্রশাসনিক অডিট জরুরি।
বাংলাদেশের উন্নয়ন তখনই সঠিক পথে অগ্রসর হবে, যখন যোগ্যতা, সততা ও জবাবদিহিতা হবে পদোন্নতি ও নিয়োগের একমাত্র মানদণ্ড।
কারণ, উন্নয়নের পথে সবচেয়ে বড় বাধা অর্থের অভাব নয় নৈতিকতার অবক্ষয়।