নিউজ ডেস্ক :: রাজধানীর মিরপুরে আলিফ পরিবহনের বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনা বাংলাদেশের রাজনৈতিক সহিংসতা ও চাঁদাবাজির নগ্ন চিত্র আবারও সামনে নিয়ে এসেছে। অভিযোগ রয়েছে রূপনগর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবং ৬নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি হারুন অর রশীদ চাঁদার টাকা না পেয়ে বাসে আগুন ধরিয়ে দেন। এ ধরনের কর্মকাণ্ড কেবল একটি বাসের ক্ষতি নয়, বরং হাজারো মানুষের নিরাপত্তা ও জনজীবনকে জিম্মি করার অপকৌশল।
কিন্তু বিস্ময়কর বিষয় হলো, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অবস্থান। পুলিশ এ ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে। তারা বলছে এটি নাকি পরিবহন শ্রমিকদের বেতন নিয়ে অসন্তোষের জের। এমন ব্যাখ্যা কেবলই অপরাধীদের আড়াল করার প্রয়াস নয়, বরং জনগণের আস্থাকে ভেঙে দেওয়ার কৌশল। যখন অপরাধীরা রাজনৈতিক পরিচয়ে রক্ষাকবচ পায়, তখন তারা আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে।
বাসে আগুন মানে শুধু ধ্বংস নয়—এটি যাত্রীদের জীবনের ওপর সরাসরি আক্রমণ। শহরের সাধারণ মানুষ প্রতিদিনই চাঁদাবাজি, গ্যাং কালচার ও রাজনৈতিক সন্ত্রাসের ভয়ে আতঙ্কিত। অথচ যাদের হাতে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ও দায়িত্ব, তারাই যখন অপরাধীদের পৃষ্ঠপোষকতায় লিপ্ত থাকে, তখন নাগরিকদের নিরাপত্তা প্রশ্নবিদ্ধ হয়।
এখানে মূল প্রশ্ন হলো রাষ্ট্র কি সাধারণ মানুষের, নাকি চাঁদাবাজদের? পুলিশ যদি অপরাধীদের পাহারাদার হয়ে দাঁড়ায়, তাহলে আইন তার মর্যাদা হারায়। রাষ্ট্র তখন দুর্বৃত্তদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়ে।
আজ সময় এসেছে, এসব অগ্নিসন্ত্রাসের আসল হোতাদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করার এবং তাদের বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করানোর। শুধু রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমন নয়, বরং সত্যিকার অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া ছাড়া আইন-শৃঙ্খলার প্রতি জনগণের আস্থা ফিরে আসবে না।
মিরপুরের এই ঘটনার মধ্যে দিয়ে স্পষ্ট হয়ে গেছে চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসীরা যখন রাষ্ট্রযন্ত্রের ছায়ায় আশ্রয় পায়, তখন জনগণ হয়ে ওঠে সবচেয়ে অসহায়। তাই দেশ ও সমাজকে বাঁচাতে হলে এই দুর্বৃত্তচক্রকে রুখতেই হবে।